ঠোঁট আমাদের ত্বকের সবচেয়ে সেনসিটিভ অংশ। অন্যান্য অংশের তুলনায় ঠোঁট এর চামড়া অনেক পাতলা এবং তাপমাত্রার সামান্য তারতম্যেই এ অংশ শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। এই অতি সংবেদনশীলতার ফলেই ঠোঁট কালচে বা কালচে-বাদামি রঙ ধারন করতে পারে। আজ আমরা জানব ঠোঁট কালচে হওয়ার কারণ এবং এর সমাধান।
# জেনেটিক: দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য অনেকের জেনেটিকালি ঠোঁট কালো হওয়ার প্রবণতা থাকে। এক্ষেত্রে মেলানিন তৈরি করে যে কোষ ‘মেলানোসাইট’ তা অন্য মানুষের তুলনায় বেশি মাত্রায় মেলানিন তৈরি করে।
# এনিমিয়া: জেনে অবাক হবেন যে বিভিন্ন রিসার্চ এ পাওয়া গেছে যে বাংলাদেশের প্রায় ৪৫% মানুষ কখনো না কখনো এনিমিয়াতে ভোগেন। এনিমিয়ার ফলে রক্তের হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা কমে যায় এবং এই হিমোগ্লোবিন আমাদের দেহে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অক্সিজেন বহন করে। অক্সিজেনের অভাবে ঠোঁট কালচে রঙ ধারণ করে।
# কসমেটিকস: আপনার পছন্দের লিপগ্লস বা লিপস্টিকটির টাইম এক্সপায়ার হয়ে গেছে কিনা তা আপনাকে জানতে হবে। Lip Product এ বিভিন্ন কেমিক্যাল ও কালারিং এজেন্ট থাকে যা EXPIRED হয়ে গেলে ঠোঁট এর জন্য মারাত্নক ক্ষতিকর হতে পারে।
# ক্যাফেইন জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ: অনেকেই জানেন যে স্মোকিং এর ফলে ঠোঁট কালো হয়ে যায়, একই কথা চা, কফি জাতীয় পদার্থ এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
# পানিশূন্যতা: পানিশূন্যতার জন্য ঠোঁটের চামড়া শুকিয়ে যায় ফলে ঠোঁট কালো হয়ে যেতে পারে।
এছাড়াও বিভিন্ন অসুধের প্রতিক্রিয়ায় Post Inflammatory Hyperpigmentation এবং বেশি মাত্রায় বিভিন্ন Corrosive Agent যেমন মাউথওয়াশ ব্যবহারের পর ঠিকমত মুখ না ধোয়ার ফলেও ঠোঁট এর আশপাশের অংশ কালচে রঙ ধারন করতে পারে।
প্রতিকার ও চিকিৎসা:
ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে ‘Prevention Is Better Than Cure’। ডার্ক লিপস এর ক্ষেত্রেও এ কথাটি প্রযোজ্য।
- প্রতিদিন সানস্ক্রিন সম্রিদ্ধ একটি ভালমানের লিপবাম ব্যবহার করুন। এতে ঠোঁট শুষ্ক থাকবেনা আর অহেতুক জিহবা দিয়ে ঠোঁট চাটার প্রবণতা কমে আসবে।
- ধূমপান এবং চা-কফি পান থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। প্রতিবার স্মোকিং বা চা/কফি পানের পর কুলকুচি করুন এবং পানি পান করুন।
- প্রতিদিন ২-৩ লিটার পানি পানের অভ্যাস করুন।
- ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হোন এবং এনিমিয়া থাকলে তার সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
এস্থেটিক প্রসিডিউর যেমন পিল এবং লেজার এর সহায়তায় ঠোঁটের কালচে ভাব কমিয়ে আনা সম্ভব।
আরো বিস্তারিত জানতে এবং কালচে ঠোঁটের সঠিক চিকিৎসা পেতে “স্কিনেজ ডারমাকেয়ার” এ আসুন।
লিখেছেন : ডা. তাসনিম তামান্না হক
চিফ কনসালটেন্ট, স্কিনেজ ডারমাকেয়ার